‘শুধুমাত্র নিজেদের চ্যানেলের ভিউয়ার্স বাড়াতে এবং আমাকে নিয়ে হাসি ঠাট্টা করতেই ইউটিউবাররা আমার বাড়িতে আসে,’ অকপট রানাঘাটের ‘লতাকণ্ঠী’ রানু মণ্ডল

সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে বর্তমানে কিছুই অসম্ভব নয়। যেকোনো কিছু মুহূর্তের মধ্যে ভাইরাল হয়ে যাওয়ার পিছনে এই সোশ্যাল মিডিয়ার অনেক বড় অবদান রয়েছে। এই সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে প্রতিদিন কত কত প্রতিভা উঠে আসছে আমাদের সামনে। আর এই সোশ্যাল মিডিয়ার হাত ধরেই জনপ্রিয়তা পেয়েছিলেন রানাঘাটের রানু মন্ডল এবং বীরভূমের ভুবন বাদ্যকর। কিন্তু বর্তমানে রানু মন্ডল এর জনপ্রিয়তা ফিকে হয়ে গেছে। তিনবছর আগে যেমন তার গান দেশের কোনায় কোনায় ছড়িয়ে পড়েছিল বর্তমান সময় তেমনই তাকে নিয়ে চলছে নানান রকম হাস্যকর ভিডিও।
তিন বছর আগে রানাঘাট স্টেশনে বসে ভিক্ষা করতে করতে তার গান গাওয়ার একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে কেউ একজন পোস্ট করে এবং সেই ভিডিওটা রাতারাতি ভাইরাল হয়ে পড়ে। চোখে পড়ে বলিউডের অন্যতম জনপ্রিয় গায়ক হিমেশ রেশমির। তার নজরে আসায় পর তিনি রানু মন্ডল কে সুদূর মুম্বাই নিয়ে যান এবং নিজের অ্যালবামের গান গাওয়ার সুযোগ করে দেন। তারপর থেকে রানু মন্ডল এর জনপ্রিয়তা দিকে দিকে ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে তা ফিকে হতে থাকে এবং রানু মন্ডল এর নানা কর্মকাণ্ডের জন্য তিনি ট্রোল হতে থাকেন। হিমেশ রেশমির অ্যালবামে তেরি মেরি গানের সঙ্গে আত্মপ্রকাশ করেন তিনি। এই গান এতটাই জনপ্রিয়তা পেয়েছিল যে সোশ্যাল মিডিয়ায় সকলেই এই গানের সাহায্যে ভিডিও বানিয়ে ছিলেন সে বছর এই গানটি দারুণ জনপ্রিয়তা পেয়েছিল।
কিন্তু বর্তমানে তার জনপ্রিয়তা একেবারেই ফিকে হয়ে গিয়েছে তবে তার বাড়িতে মাঝে মাঝে বিভিন্ন ইউটিউবারদের আনাগোনা দেখা যায়। তবে সেই সমস্ত ভিডিওতে শুধুমাত্র রানু মন্ডল কে নিয়ে হাসি ঠাট্টা মজার ট্রল ইত্যাদি করা হয়ে থাকে। নিজেদের চ্যানেলের লাইক, ভিউয়ারস বাড়ানোর জন্য কিছু কিছু ইউটিউবার এই ধরনের কাজ করে থাকেন। আর এই ধরনের কাজকে অনেকেই সাপোর্ট করলেও কিছু কিছু নেটিজেন প্রতিবাদ করেছে। কারণ একজন মানসিক ভারসাম্যহীন মহিলাটি নিয়ে এই ধরনের হাসি ঠাট্টা করা মূলত অপরাধ।
রানাঘাটের একটি ভাঙ্গাচোরা পুরনো বাড়িতে থাকেন রানু মন্ডল। সেখানে বসবাস করার মতো একটা ঘর রয়েছে রয়েছে মাথার উপর এক চিলতে ছাদ সেখানেই কষ্টে দিন কাটান রানু মন্ডল। প্রতিদিনই প্রায় গেট খুললেই মোবাইল নিয়ে ঢুকে পড়ে ইউটিউবাররা। রাণুর কথায়, “জানেন, ওদের জ্বালায় রোজ স্নান করতেও পারি না।” আড়ালে আবডালে সবাই তাকে পাগল বলে। তবে নিজের মানসিক ভারসাম্য তার জন্যই জনপ্রিয়তা হারিয়েছেন বলেই দাবি প্রত্যেকের।