স্বামী মারা যাওয়ার পর চায়ের দোকান করে তিনটি ফ্ল্যাট, বাড়ি কিনেছেন, সন্তানদের মানুষ করেছেন শিখা দেবী! দিদি নাম্বার ওয়ানে তার গল্প মুগ্ধ করে দিয়েছে দর্শকদের
জি বাংলার জনপ্রিয় রিয়েলিটি শো ‘দিদি নাম্বার ওয়ান’-এ বিভিন্ন জায়গা থেকে দিদিরা আসেন এবং তাদের লড়াইয়ের গল্প বলেন , এই সকল দিদিদের গল্প অন্যদের মনে অনুপ্রেরণা জাগায়। সম্প্রতি এই শো তে শিখা দাস নামের একজন দিদি এসেছিলেন তিনি তার জীবনের গল্প বলেন, জীবনের চড়াই উতরায় পেরিয়ে আসার গল্প বলেন। ১৯৮১ সালে বিয়ে হয় শিখার। তার চারটে সন্তান হয়। একটা এক্সিডেন্টে তার স্বামীর পা নষ্ট হয়ে যায় আর ২০০৬ সালে তার স্বামী মারা যায়। এরপর চার সন্তানকে মানুষ করবার জন্য তার জীবন যুদ্ধ শুরু হয়।
শিখা ‘দিদি নাম্বার ওয়ানে’র মঞ্চে এসে বলেন, স্বামী একটা ছোট্ট ঝুপড়ি রেখে গিয়েছিলেন আর এক লিটার দুধ ধরে এরকম একটি সসপ্যান রেখে গিয়েছিলেন। তখন সেই সসপ্যানে চা তৈরি করে জনতার মধ্যে প্রথম চা বিক্রি করতে শুরু করেন তিনি। সেই সময় পাড়ার ও আশেপাশের লোকেরা তাকে অনেক সাপোর্ট করেছিলেন। এরপর ১ লিটার থেকে রোজ দিনে ২ লিটার চা বিক্রি করতে শুরু করেন মানুষজন তাকে উৎসাহ দিয়ে বলে হ্যাঁ দিদি আপনি ব্যবসা বাড়ান আমরা আপনার কাছে চার কাপ চা খাব। মানুষের উৎসাহে তিনি আরো চা বানানোর পরিমান বাড়াতে থাকেন বর্তমানে ১০০ থেকে ১১০ লিটার চা তিনি রোজ বিক্রি করেন।
মানিকতলা মেইন রোডের উপর ভিআইপি রোডের সংযোগস্থলে শিখা দেবীর চায়ের দোকান ভোর সাড়ে তিনটা থেকেই খোলা থাকে। সাড়ে তিনটে থেকে চারটের মধ্যে দোকান খোলেন তিনি। রচনা যখন বিস্মিত হয়ে জিজ্ঞেস করে যে এত ভোরে কে চা খায়? তখন শিখা দেবী বলেন, বেকারি থেকে ভাঁড়ওয়ালা যখনই তিনি দোকান খোলেন না কেন ঠিক ক্রেতা পেয়ে যান। এখন নিজের দোকান অনেকটা বড় করে নিয়েছেন তিনি।
তবে তার এই যাত্রা পথে তার বাপের বাড়ির লোক, বড় ভাই, ছোট ভাই, বোনেদের সাহায্য পেলেও শ্বশুর বাড়ির কেউ তাকে সাহায্য করেননি বলে আক্ষেপ করেন শিখা দেবী। ১৬ বছর ধরে চা বিক্রি করে শিখা দেবী তিনটে ফ্ল্যাট কিনেছেন। দুই ছেলেকে গ্রাজুয়েট পাশ করিয়ে বিয়ে দিয়েছেন। এমনকি যে বাড়িতে তিনি ভাড়া থাকতেন সেই বাড়িটিও তিনি কিনেছেন। এখন ছেলে বৌমার নাতনি নিয়ে তার একটা ভরা সংসার হয়েছে। তবুও চায়ের দোকান আজও খুলে যান তিনি। আসলে এই দোকান ই যে তার পরিচিতি।