পথ কুকুরদের সেবায় নিজের ২০টি গাড়ি এবং ৩টি বাড়ি বিক্রি করে দিয়েছেন এই ব্যক্তি! সকলের কাছে তিনি এখন ‘ডগ ফাদার’ নামে পরিচিত

স্বামী বিবেকানন্দের একটি খুব প্রচলিত বাণী রয়েছে ‘জীবে প্রেম করে যেইজন সেইজন সেবিছে ঈশ্বর, জীব সেবাই শিব সেবা।’ এই কথাগুলো আমরা ছোটবেলা থেকেই শুনে আসছি। এই বাণী অনেকের কাছেই মূল্যহীন। তবে আমাদের দেশে এমন অনেক মানুষ রয়েছেন যারা জীব সেবাই নিজেদের প্রাণ ঢেলে দিয়েছেন। নিজের সবটুকু দিয়ে পথের কুকুর-বিড়াল আরো বিভিন্ন পশুদের সেবা করে গেছে। তেমনই একজন ঈশ্বররূপী মানুষ হলেন রাকেশ শুক্লা। যিনি কুকুরপ্রেমে নিজেকে নিয়োজিত করেছেন।
আশা করি আমাদের সকলেরই মনে আছে এই ২০২০ সালের একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছিল। সেই ভিডিওটি দেখানো হয়েছিল তেলঙ্গানার সিদ্দিপেট জেলায় দুই দিনে প্রায় ১০০ টি কুকুরকে বিষ প্রয়োগ করে মেরে ফেলা হয়েছিল। কম্প্যাশনেট সোসাইটি অফ অ্যানিম্যালসের সদস্য বিদ্যা এটি ভিডিও করে সোশ্যাল মিডিয়ায় সকলের সামনে এই ঘটনাটি তুলে ধরেন। কুকুরের সংখ্যা কমাতে নাকি পৌর কর্পোরেশন থেকে এই ধরনের কাজ করা হয়েছে।
তবে পৃথিবীতে এখনো ভালো মানুষ বেঁচে রয়েছে আর রাকেশ তাদের মধ্যেই একজন রাস্তার কুকুরদের লালন-পালন করার জন্য রাকেশ নিজের কুড়িটি গাড়ি এবং তিনটি বাড়ি বিক্রি করে দিয়েছে। রাকেশ ৮০০টিরও বেশি পথ কুকুরের জন্য একটি খামার ঘর প্রস্তুত করেছেন। তার ফার্মে সাতটি ঘোড়া ও দশটি গরুও রয়েছে। এখানে কাউকেই শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা হয় না এখানে যে যার মত স্বাধীনভাবে ঘুরে বেড়ায় কেউ সুইমিংপুলে কখনো সাঁতার কাটছে আবার কখনো ঘুরে বেড়াচ্ছি এদিক-ওদিক পুরো স্বাধীনতা দেয়া হয় প্রত্যেককে। তবে শুধুমাত্র রাস্তার কুকুর তেরি লালন-পালনের দায়িত্ব নিয়েছে এমনটা নয় রাকেশের কাছে এমন অনেক কুকুর রয়েছে যারা একসময় ম্যাঙ্গালোর পুলিশে চাকরি করেছে। বয়স বাড়ার সাথে সাথে যেহেতু কুকুরগুলি কম সক্রিয় হয়ে পড়ে তার কারণেই রাকেশ নিজের ফার্ম হাউসে ওদের নিয়ে এসে যত্ন করে।
আজ রাকেশ সকলের কাছেই ডগ ফাদার নামে পরিচিত। ৪৮ বছর বয়সী রাকেশ একজন ব্যবসায়ী ব্যাঙ্গালোরের তার ব্যবসা রয়েছে এর আগে তিনি দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ঘুরে ব্যবসা করেছেন। মিডিয়ার সামনে সাক্ষাত্কার দিতে গিয়ে রাকেশ বলেছেন যে একটা সময় গাড়ি-বাড়ি এসবই তিনি সাফল্য হিসেবে ধরতেন। কিন্তু পরে তিনি বুঝতে পারেন যে জীবে প্রেম করাটাও দরকার তাই তিনি কুকুর সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করেছেন। আর তাদের জন্যই এবং কুড়িটি গাড়ি এবং তিনটি বাড়ি বিক্রি করে দিয়েছে।
বর্তমানে পথ কুকুরদের অবস্থা খুবই খারাপ কখনো তারা নিষ্ঠুর মানুষদের শিকার হচ্ছে আবার কখনো গাড়ি চাপা পড়ে মারা যাচ্ছে। ২০০৯ সালে প্রথম রাকেশ বাবু এই কাজ শুরু করে ৪৫ দিনের গোল্ডেন রিট্রিভার ‘কাব্য’কে নিয়ে হাজির হয়। ঠিক সেই বছরই নিজের কুকুরকে নিয়ে রাস্তায় হাঁটতে বেরিয়েছিলেন রাকেশ হবে আর ঠিক তখনই কুকুরছানাকে বৃষ্টির সঙ্গে মোকাবিলা করতে দেখতে পায় তখন সে কুকুরছানাটিকে রাস্তা থেকে তুলে এনে নিজের বাড়িতে নিয়ে আসে রাকেশ বাবু এবং আমরা খেলা কি তারপর থেকেই তার কুকুরদের নিয়ে এই কাজ শুরু হয় প্রথমে তার স্ত্রী ঘোর আপত্তি জানিয়েছিলেন কিন্তু পরে রাকেশ বাবু কিশোরের জমি কিনে কুকুরদের জন্য একটি ফার্ম হাউস বানায় এবং সেখানেই তাদের সেবা যত্নের ব্যবস্থা করে।