তিনি ছাড়া আর কেউ ‘কলকাতার রসগোল্লা’ হতে পারবে না বলে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়লেন দেবশ্রী !
![](https://www.kolkatajournal.com/wp-content/uploads/2024/01/Devashree-challenged-that-no-one-else-can-be-Rosagolla-of-Kolkata-except-him.jpg)
‘রসগোল্লা’ বাংলার এই মিষ্টির চাহিদা কিন্তু বিশাল। এমন কোন বাঙালি নেই যে রসগোল্লা খেতে পছন্দ করে না। বরং বাঙালিরা তো বটেই, সেই সঙ্গে এখন বাংলা ছাড়িয়ে অন্য রাজ্যেও রসে ভরা এই সুস্বাদু নরম মিষ্টির চাহিদা বিশাল। যদিও এই মিষ্টি প্রথম কোথায় আবিষ্কার হয়েছিল সেই নিয়ে একটা বিতর্ক ছিল।
অনেকের মতে, ১৬ শতাব্দীতে নাকি এই মিষ্টান্ন আবিষ্কৃত হয়েছিল বাংলাদেশে। আবার ওড়িশাবাসীদের দাবি এই মিষ্টি নাকি তাঁদের তৈরি। তবে এইসব বিতর্কের মধ্যে শেষমেষ পশ্চিমবঙ্গেরই জয় হয়। আর ২০১৭ সালে সেই স্বীকৃতি ও মিলেছিল। তাই যে যাই বলুক না কেন রসগোল্লা কিন্তু বাংলারই মিষ্টি। আর সেই মতো দেখতে গেলে ১৮৬৮ সালে রসগোল্লা আবিষ্কার করেছিলেন উত্তর কলকাতার ময়রা নবীনচন্দ্র দাস।
স্ত্রী ক্ষীরোদমণি দেবীর আবদারেই নাকি বাঙালির সেরা মিষ্টি রসগোল্লা তৈরি করেছিলেন তিনি। আর সেই তথ্য আমরা পাভেল পরিচালিত ‘রসগোল্লা’ ছবিতেও দেখতে পেয়েছিলাম। তবে রসগোল্লা বাংলায় তৈরি হলেও কলকাতার রসগোল্লা কিন্তু নিঃসন্দেহে একজনই। তিনি হলেন জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত অভিনেত্রী দেবশ্রী রায়। তাঁর সেই ‘আমি কলকাতার রসগোল্লা’ গানে নাচার কথা আজও কেউ ভুলতে পারেননি।
আর গানটি তো এতবছর পরেও মানুষের মনে একেবারে গেঁথে রয়েছে। সেই বিখ্যাত গানটি গেয়েছিলেন কবিতা কৃষ্ণমূর্তি, সুর দিয়েছিলেন বাপ্পি লাহিড়ি এবং গানের কথা ছিল পুলক বন্দ্যোপাধ্যায়ের। ১৯৯২ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ছবি ‘রক্তে লেখা’-তে অভিনয় করেছিলেন দেবশ্রী রায়। সেই ছবিতে দুজন নায়ক ছিলেন। একজন ছিলেন প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় এবং অন্যজন ছিলেন চিরঞ্জিত চক্রবর্তী।
এক পকেটমারের চরিত্রে দেবশ্রীকে দেখা গেছিল ছবিতে। সে রাস্তায় নাচে। সুন্দরীর নাচ দেখে লোকে ভুলে যায় এবং সেই কৌশলে পকেটমারি করে। দৃশ্যটি দেখানো হয়েছিল এই গানের মাধ্যমে। কখনও হলুদ ঘাগরা তো কখনও আবার লাল পাড় সাদা শাড়িতে কোমর দুলিয়ে এই গানে নেচে দর্শককে তাক লাগিয়ে দিয়েছিলেন অভিনেত্রী।
তবে গানটা অনেকদিনের হয়ে গেলেও অভিনেত্রী বিশ্বাস করেন এখনও পর্যন্ত তিনিই কলকাতার রসগোল্লা। এই গানটি যখন জনপ্রিয় হয়েছিল তখন থেকেই কলকাতার রসগোল্লা হিসেবে পরিচিতি পেতে শুরু করেন দেবশ্রী। রসগোল্লা যেন দেবশ্রীরই সমনাম হয়ে ওঠে রাতারাতি। বাঙালি দর্শক তো বটেই, অভিনেত্রী নিজেও বলেছেন তিনি ছাড়া আর কেউ কোনওদিনও কলকাতার রসগোল্লা হতে পারবেন না।
এই বিষয়ে দেবশ্রী এক সংবাদমাধ্যমের সাক্ষাৎকারে বলেছেন, “আমি ছাড়া আর কেউ কলকাতার রসগোল্লা হতেই পারবে না। অসম্ভব। হয়েছিল তো রিমেক। পেরেছে কি ধারেকাছে তৈরি করতে আমার মতো কাউকে। পারেনি। পারবেও না। এটা আমার চ্যালেঞ্জ।” প্রসঙ্গত, অভিনেত্রী রুক্মিণী মৈত্র ‘কলকাতার রসগোল্লা’ গানের রিমেকে নেচেছিলেন ‘ককপিট’ ছবিতে।
দেবশ্রী তো ‘কলকাতার রসগোল্লা’ কিন্তু তিনি কি বাঙালির এই প্রিয় মিষ্টি খেতে পছন্দ করেন ? জবাবে অভিনেত্রী বলেছেন, “ও মা খাবো না কেন ? ওটা আমার প্রিয় মিষ্টি। আমি তো আমার পোষ্যদেরও খাইয়েছি।” তাহলে একসাথে কটা রসগোল্লা খেতে পারেন অভিনেত্রী ? দেবশ্রী বলেন, “বেশ কয়েকটা খেতে পারি। এখন তো আবার নলেন গুড়ের রসগোল্লা পাওয়া যাচ্ছে।
জানেন তো, কলকাতার বাইরে জেলার রসগোল্লা খেতে বেশি ভাল লাগে আমার। বাড়ির সামনের দোকানেও ভাল রসগোল্লা পাওয়া যায়।” তবে সেই সঙ্গে অভিনেত্রী এও জানিয়েছেন তিনি খুব খুশি হয়েছেন যে মিঠুন চক্রবর্তী পদ্মভূষণ পেয়েছেন। তাই তিনি তাঁকে রসগোল্লা খাওয়াতে চান। যেহেতু সামনেই তাঁর সঙ্গে মিঠুন চক্রবর্তীর একটা কাজ রয়েছে।
আরও পড়ুন : ওমকারকে বাঁচাতে মার খেলো শ্রাবণ! এবার কি প্রেম জমে ক্ষীর হবে?
তাই অভিনেতাকে তখন তিনি রসগোল্লা খাওয়াবেন বলে জানিয়েছেন। তবে এর সাথে দেবশ্রী মজার ছলে এও বলেছেন যে যাঁদের ডায়াবেটিস আছে, তাঁর মুখের সামনে থেকে রসগোল্লার হাঁড়িটাই কেড়ে নেবেন তিনি। তবে আর যাই হোক না কেন এখনও যে তিনি কলকাতার রসগোল্লা আর তাঁর জায়গা যে আর কেউ কখনও নিতে পারবে না সেই বিষয়ে বেশ স্পষ্ট অভিনেত্রী।