আঠেরো বছর ইন্ডাস্ট্রিতে থাকার পর কী মনে হয় দেবের ?
![](https://www.kolkatajournal.com/wp-content/uploads/2024/02/After-being-in-the-industry-for-eighteen-years-what-do-you-think.jpg)
২০০৬সালে প্রথম ছবি ‘অগ্নিশপথ’ দিয়ে টলিউডে পা রাখেন জনপ্রিয় অভিনেতা দেব। এরপরে তাঁকে আর ফিরে তাকাতে হয়নি। একেরপর এক সিনেমা উপহার দিয়ে দর্শকদের মনে জায়গা করে নিয়েছেন তিনি। মুম্বাইয়ের এই ছেলেটা আজ পুরো টলিউড কাঁপাচ্ছে। প্রায় আঠারোবছর কাটিয়ে ফেলেছেন এই ইন্ডাস্ট্রিতে। অভিনেতা হিসেবে তাঁর এতবছরের অভিজ্ঞতাটা ঠিক কেমন?
অভিনয় থেকে রাজনীতি সবটা নিয়েই এক সংবাদমাধ্যমের কাছে খোলাখুলি কথা বললেন অভিনেতা দেব। ইন্ডাস্ট্রিতে আঠারোবছর কাটিয়ে ফেলাল পর আজ পিছন ফিরে তাকালে কী মনে হয় দেবের?এর উত্তরে দেব বলেন,”এখনও অনেকটা পথ বাকি,সবে কাজ শুরু করেছি মনে হয়।
যখন বুম্বাদাকে দেখি,রজনীকান্তকে দেখি,ফর দ্যাট ম্যাটার মিঠুনদাকে দেখি–এঁরা সকলে দাপিয়ে কাজ করছেন প্রায় চল্লিশবছর ধরে,সেখানে আঠারোবছরটা কিছুই না।এখন যে লড়াইটা চলছে,যেভাবে লোকাল সবকিছু গ্লোবাল হয়ে যাচ্ছে,ন্যাশনাল লেভেলে চলে যাচ্ছে, আমিও চাইব বাংলা ছবির কনটেন্ট সেই জায়গায় পৌঁছে যাক।”
তিনি মনে করেন,এই আঠারো বছর ধরে তাঁর যে ছবি চলছে,দর্শকের ভালোবাসা যে তিনি এখনও পাচ্ছেন সেটাই বড় ব্যাপার।রাজনৈতিক কারণে তাঁকে অনেকে নানা কথা বলেছে কিন্তু তিনি বিশ্বাস করেন নিজের কাজের প্রতি যদি সৎ থাকা যায় তাহলে ফল পাওয়া যাবেই।
আরও পড়ুন : অমিতাভ বচ্চনের পুত্রবধূর স্নান নিয়ে এ কি বলে বসলেন রণবীর ?
তাই তিনি মনে করেন কাজের প্রতি তাঁর ডেডিকেশন তাঁকে আঠারোবছর ধরে টিকিয়ে রেখেছে।মুম্বই থেকে দেবের আজকে এতটা পথে সবচেয়ে বড় বাঁধা কী ছিল?দেব মনে করেন,সুযোগ পাওয়াটাই তাঁর কাছে ছিল বড় বাঁধা। কারণ তিনি মুম্বইয়ে মধ্যবিত্ত বাড়িতে বড় হয়েছেন তাই বাংলা লিখতে,পড়তে কিছুই পারতেন না।
তাঁর দ্বিতীয় ছবি হিট হওয়ার পর মনে হয়েছিল যে,এবারে তাঁকে বাংলা বলতে,পড়তে এবং লিখতে জানতে হবে।কিন্তু ভাষাটাকে রপ্ত করাটা সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল।প্রতিটা ছবির সঙ্গে,একটু একটু করে নিজেকে গ্রুম করেছেন এবং সবসময় মনে রেখেছেন আরও ভালো করতে হবে,পারফেকশনের কাছাকাছি পৌঁছতে হবে।
তাই নিজের সঙ্গে নিজের লড়াইটাই ছিল দেবের কাছে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।তাঁর কেরিয়ারে টার্নিং পয়েন্ট কোনটা?দেবের মতে, প্রথম সুযোগ পাওয়াটাই ছিল টার্নিং পয়েন্ট। অগ্নিশপথ তাঁর জীবনে মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছিল।কারণ,এই ছবিটা না হলে তিনি কলকাতায় আসতেন না।এরপরেই এসভিএফের সঙ্গে সেকেন্ড ছবিটা হয়েছিল।
তাই প্রথমটা না হলে,তিনি মুম্বইতেই থেকে যেতেন।হয়তো ওখানে অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর হিসেবে বা তাঁর বাবার ক্যাটারিং ব্যবসায়,বা কোনও চাকরিতে কিংবা মডেলিং করতেন।তিনি সেইসময় মুম্বই থেকে বেরোতে চেয়েছিলেন তাই কিছু না ভেবেই চলে এসেছিলেন। তখন জানতেন একমাসের বেশি থাকবেন না,ছবি করবেন আর চলে যাবেন।
কিন্তু একমাসের জন্য এসে আঠারোবছর যে তিনি থেকে যাবেন তা ভাবতে পারেননি।তাঁর’প্রধান’ ছবির পঞ্চাশদিন হল।হিন্দি ছবির পাশাপাশি বক্সঅফিসে লড়াইটা কতটা কঠিন? দেব বলেন,তাঁর’বাঘা যতীন’ ছবি একশোদিনের পথে। ‘প্রধান’ পঞ্চাশদিন শেষ করল। একজন অভিনেতা,প্রযোজক হিসেবে তিনি চান তাঁর বডি অফ ওয়ার্ক-এ ভ্যারাইটি থাকুক।সবধরনের ছবি তিনি করতে চান বিনোদন মাথায় রেখে।
প্রধানের পর,পেশায় জমাদারের চরিত্রে দেখা যাবে দেবকে।এনিয়ে দেব বলেন,তিনি এই ট্রান্সফরমেশনটা খুব এনজয় করেন।সবসময় চেষ্টা করেন যাতে একরকম নয় বরং একেকটা ছবিতে আলাদা মানুষ হিসেবে তাঁকে মনে হয়।এই চরিত্রে তিনি রাজি হয়েছেন কারণ গল্পটা তাঁর খুব ভালো লেগেছে।একটা ফ্রেশনেস আছে।তিনি সৃজিতের সঙ্গে কাজ করতে চেয়েছিলেন তাই সৃজিত এই সাবজেক্টটা শোনানোর পর তিনি বলেছিলেন,”আই ওয়ান্ট টু ডু দিস।
আর যে চরিত্রে আমাকে কেউ ভাববে না তেমন চরিত্রই তো করতে চাইব।আমাকে যদি আরও আঠারো বছর সারভাইভ করতে হয়, তাহলে তো নিজেকে ভাঙতে হবে।” দেবের কাছে এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং চরিত্র হল’খাদান’-এ যে চরিত্রটা তিনি করবেন সেটা।এটা একটা কয়লাখনির গল্প।সেখানে দুইবন্ধুর সম্পর্ক দেখা যাবে।
যে চরিত্রে তিনি আর যিশু অভিনয় করছেন।শেষপর্যন্ত দুইবন্ধু কীভাবে কাঁধেকাঁধ রেখে সববাঁধা পেরোয় সেই গল্পই দেখানো হবে এখানে।একদিকে রাজনীতিবিদ অন্যদিকে অভিনেতা এবং প্রযোজক।দেবকে কোনটার ইমেজ বাঁচিয়ে চলতে হয়?অভিনেতা বলেন,রাজনীতি এবং অভিনয় দুটোই তিনি ডেডিকেশন এবং সততা নিয়ে করেন।
আরও পড়ুন : এক ব্যক্তিকে চড় মারার অভিযোগ! বিতর্কে জড়ালেন ‘বিগ বস ওটিটি ২’ বিজয়ী এলভিশ যাদব
এরমধ্যে কোনও লড়াই নেই।তাঁর পদের কোনও মোহ নেই।তিনি ভেবেছিলেন ছেড়ে দেবেন কিন্তু রাজ্য সরকার ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যান নিয়ে আশা দেখাতেই তিনি ফিরে এসেছেন।দেবের কথায়,তিনি দিদিকে বলেছিলেন তাঁর কোনও পদ চাই না।কিন্তু নির্বাচনের আগে দলের ক্ষতি তিনি চাননি।
তাই দল যেভাবে বলবে তিনি পাশে থাকবেন।সন্দেশখালির বর্বর,নিন্দনীয় ঘটনা নিয়ে দেব বলেন,তাঁর মনে হয় প্রশাসনের কাজ সাধারণ মানুষকে কীভাবে শান্তিতে এবং নির্ভয়ে ভালোভাবে রাখা যায় সেটা দেখা।তাই এরজন্য প্রশাসন এবং সরকারকে যা করার করতে হবে।ইডির তলব নিয়ে দেব জানিয়েছেন,”দেশের প্রতি, দেশের মানুষের প্রতি আমার কর্তব্যকে সবচেয়ে এগিয়ে রাখি।আমি আমার কর্তব্য পালন করব।
নিশ্চয়ই যাব।”সবশেষে নিজের বান্ধবী রুক্মিণীকে ভালোবাসার মাসে প্রেমের বার্তা দিয়ে দেব বলেছেন,”এটাই বলব যে আমাকে ভালো রেখো,ভালো রাখলে,ভালো থাকবে!আর আমার ভক্তদের বলব আমাকে তাঁরা নিজের প্রার্থনায় রাখুন।সামনে কঠিন লড়াই।”