অক্ষয় কুমারের সঙ্গে প্রথম অভিনয়, জনপ্রিয় মডেল-অভিনেত্রী বৌদ্ধ ভিক্ষুনি এখন গ্যালটেন সামটেনের

সালটা ১৯৯৬। অক্ষয় কুমার, রেখা, রবীনা টন্ডন অভিনীত ‘খিলাড়িয়ো কা খিলাড়ি’ ছবিটি মুক্তি পেতেই নজর কেড়েছিলেন আরও এক অভিনেত্রী। বুঝতে পারছেন কার কথা বলা হচ্ছে ? তিনি হলেন নায়িকা বরখা মদন। ‘খিলাড়িয়ো কা খিলাড়ি’ ছবির মাধ্যমেই আত্মপ্রকাশ করেছিলেন সিলভার স্ক্রিনে। তবে বড় পর্দায় প্রথম কাজ করার সুযোগ পাওয়ার পর বলিউডে সাড়া ফেললেও বরখা সেই গ্ল্যামারকে অবলীলায় পিছনে ফেলে দিয়েছিলেন। আর তাতেই নায়িকা থেকে হয়ে উঠেছিলেন ভিক্ষুনি।
১৯৭৪ সালে এক পঞ্জাবি পরিবারে জন্ম বরখা মদনের। ইংরেজিতে স্নাতক হওয়ার পরে তিনি মডেলিংকে পেশা হিসেবে গ্রহণ করেন। সুযোগ হয় বড় পর্দাতেও। ১৯৯৬ সালে প্রথম ছবি ‘খিলাড়িয়োঁ কা খিলাড়ি’। ২০০৩ সালে রামগোপাল বর্মার সিনেমা ‘ভূত’-এ তিনি ছিলেন অশরীরীর ভূমিকায়।
দেখা গেছে কিছু টেলিভিশন সিরিজেও। কিন্তু এত কিছু করেও তিনি কাজে মন বসাতে পারছিলেন না। ক্লাস সিক্সে পড়ার সময় তিনি সিকিম গিয়েছিলেন। সে সময় তার বাবা সেখানে সেনা কর্মকতা হিসেবে কর্মরত থাকার সুবাদে ওই অঞ্চলে যাওয়া। আর তখন থেকে বারবার তাকে ডাকত সিকিমের বৌদ্ধমঠ।
সেই মঠ এবং বিক্ষিপ্ত মনকে শান্ত করতে ২০১২ সালে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়ে নেন তিনি। অভিনয় তথা সংসার জীবন ছেড়ে তিনি পা রাখেন সন্ন্যাসে। মাথার চুল বিসর্জন দিয়ে কাঠমান্ডুর এক মঠে দীক্ষা নেন। আর নতুন নাম হয় গ্যালটেন সামটেন। বরখা মনে করেন, ‘সন্ন্যাস গ্রহণ মানে সংসার ছেড়ে পালানো নয়। বরং, বৌদ্ধ দর্শনকে উপলব্ধি করে সংসারের মুক্তির জন্য কাজ করা। ‘এই জীবন নিয়ে আমি সন্তুষ্ট। বৌদ্ধ ভিক্ষু হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে আমি কোনও ভুল করিনি।’’
তার জীবনের মূলমন্ত্র হল, নশ্বর জীবন এমন কাজেই ব্যবহৃত হোক, যাতে অন্যের ক্ষতিসাধন না হয়। আর, এভাবেই ঈশ্বরের চরণে নিজেকে নিবেদিত করে এক অন্য জীবনবোধের বার্তা দিয়েছেন তিনি।