পড়াশোনা শেষ করা হয়নি তার দারিদ্রতার অভাবে! একসময় রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে পেন পেন্সিল বিক্রি করেছেন জনি লিভার
জনি লিভার যেই মানুষটাকে আমরা সকলেই হাস্যরস হিসেবেই দেখে এসেছি এতদিন। আজ তারই জীবনের কিছু অজানা গল্প আপনাদের সাথে ভাগ করে নেব।
জনি লিভার এর জন্ম হয় অন্ধ্রপ্রদেশের প্রকাসম-এ একটি খ্রিস্টান তেলেগু পরিবারে। তার আসল নাম হলো জন রাও প্রকাশ রাও জানুমালা। ছোটো বেলাতেই জনি তার মা বাবা ও তিন বোন দুই ভাই এর সাথে মুম্বাইয়ের ধারভি এলাকাতে চলে আসে। তার বাবা হিন্দুস্তান ইউনিলিভার কোম্পানিতে অপারেটর এর কাজ করতো। শৈশব থেকেই তাদের বিভিন্ন দারিদ্র্য অবস্থার মধ্যে দিয়ে যেতে হতো। ফলে পড়াশুনা শেষ হয়নি জনির। সপ্তম শ্রেণীতে পড়া কালীন দারিদ্রতার জ্বালায় পড়াশুনা বন্ধ করে দেন তিনি। সেই সময় মুম্বাইয়ের রাস্তায় দাঁড়িয়ে পেন, পেন্সিল বিক্রি করতেন তিনি।
শৈশব থেকেই জনি লিভারের ইচ্ছে ছিল কমেডি চরিত্রে অভিনয় করার। কারণ তিনি অসম্ভব ভালো নকল করতে পারতেন। এরপরে তার বাবা তাকে হিন্দুস্থান ইউনিলিভার কোম্পানিতে কর্মী হিসেবে কাজে ঢুকিয়ে দেন। সেখানে কাজ করতে করতেই জনি বিভিন্ন অভিনেতার মিমিক্রি করে তার সহকর্মীদের দেখাতেন এবং তারাও বেশ প্রশংসা করত জনির অভিনয় এর। একবার সেই কোম্পানির অফিশিয়াল ফাংশনে জনি মিমিক্রি করে দেখান তারপর থেকেই তার নাম দেওয়া হয় জনি লিভার এখানে লিভার বলতে ইউনিলিভার এর লিভার শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে।
এরপর সিনিয়র অফিসারদের সাহায্যে জনি বিভিন্ন কমেডি শো এর অফার পেতে থাকে। এরপর তার কমিউনিটি এতটাই জনপ্রিয় হয়ে ওঠে যে একসময় তাকে হিন্দুস্তান ইউনিলিভারের কোম্পানি ছাড়তে হয়। কমেডি শো এর সূত্র ধরেই কল্যাণজী-আনন্দজীর গ্রুপে অংশ নেওয়ার সুযোগ আসে জনির কাছে। এখান থেকেই জনি আন্তর্জাতিক কমেডিয়ান এর খ্যাতি লাভ করেন।তিনি প্রথম ভারতবর্ষের সর্বপ্রথম ‘মাস পপুলার স্ট্যান্ড আপ কমেডিয়ান’।
অভিনয়জগতে জনির প্রথম সিনেমা ছিল ‘তুম পর হাম কুরবান’। এরপরে জনি সুনীল দত্তের নজরে আসেন। ১৯৮২ সালে জনি সুনীল দত্তের ফিল্ম ‘দর্দ ক্যা রিস্টা’ ছবিতে অভিনয় করেন কিংবদন্তির হাত ধরেই কিংবদন্তি হয়ে ওঠার গল্প শুরু হয় জনির।
এখনো অবধি জনি লিভার সাড়ে তিনশোর বেশি ছবিতে অভিনয় করেছেন। এত বড় একজন সুপারস্টার হয়েও তার মধ্যে বিন্দুমাত্র অহংকার নেই একজন সাধারন মানুষের মতোই থাকতে পছন্দ করেন জনি।
সম্প্রতি তিনি দিলীপ কুমারের শেষকৃত্যের সময় সোশ্যাল মিডিয়াতে সৌজন্যবোধ দেখিয়ে নেটিজেনদের ট্রোল এর শিকার হয়েছিলেন। কিছুদিন আগেই তিনি ৬০ এর ঘরে পা রেখেছেন এখনো অভিনয়কে ভালোবেসেই তিনি অভিনয় করে চলেছেন।