টলিউড

সংসার তাঁকে সুখ দেয়নি, এক সময়ের জনপ্রিয় অভিনেত্রী ছিলেন তিনি, তবে জীবনের শেষকালে এসেও তাঁকে লাথি-ঝাঁটা খেতে হয়েছিল ছেলে-বৌমার হাতে, জেনে নিন তাঁর কথা

ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি কাউকে সফলতা এনে দিতে পারলেও রাতারাতি সেই খ্যাতি কেড়ে নেওয়ারও ক্ষমতা ছিল এই ইন্ডাস্ট্রির। যেখানে আমরা কেবল সফল নায়ক নায়িকাদেরকেই চিনি, কিন্তু তাঁদের ব্যক্তিগত জীবন কেমন ছিল তা কি আমরা জানি? বর্তমানে নিউজ মিডিয়াগুলি ফুলে ফেঁপে উঠেছে, আর তাছাড়াও সোশ্যাল মিডিয়াতেই সকলে জানিয়ে দেন তাঁদের জীবনে কি চলছে, তাই ঘটনা ঘটার সাথে সাথেই খবর পৌঁছে যায় সকলের কাছে। তবে সত্তর আশির দশকে এমনটা ছিল না, তাই অনেকেরই জীবনকাহিনী আমাদের জানা নেই, তবে আজ আপনাদের জানাবো এমনই এক অভিনেত্রীর গল্প যিনি ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে হয়েছেন অবহেলিত।

ছোটোবেলা থেকেই খুব হাসিখুশি থাকতে পছন্দ করতেন সুমিত্রা মুখার্জি, মেয়ের এই হাসি দেখেই তাঁর মা ভালোবেসে ডাকতেন ‘হাসি’। তবে অভিনয় জগতে আসার পর থেকেই একটু একটু করে তাঁর জীবন থেকে হাসি চলে গিয়েছিল। অভিনয় জগতে পা রাখার পরে কাজ করেছেন অনেক, তাঁর বিপরীতে অভিনয় করেছেন রঞ্জিত মল্লিক, উত্তম কুমার, সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, সন্তু মুখোপাধ্যায় এবং দীপঙ্কর দে-র মতো অভিনেতারা। মুখ্য চরিত্র থেকে শুরু করে খলনায়িকা এমনকি পার্শ্বচরিত্রেও যেভাবে নিজেকে ফুটিয়ে তুলতেন তাতে বোঝা দায় যে অভিনয় করছেন না আসলেই মানুষটি এমন।

‘আজকের নায়ক’, ১৯৭২ সালে মুক্তি পেয়েছিল, এই ছবির মাধ্যমেই ইন্ডাস্ট্রিতে পথচলা শুরু সুমিত্রা দেবীর। এরপরে আর থেমে থাকেননি তিনি, কাজ করে গেছেন টানা। বিখ্যাত কিছু ছবিরও অংশ ছিলেন তিনি যেমন, ‘বসন্ত বিলাপ’, ‘দেবী চৌধুরানী’, ‘বিকেলে ভোরের ফুল’, ‘তিলোত্তমা’, ‘অমরকন্টক’, ‘মোহনার দিকে’, ‘দাদা মনি’, ‘ইন্দিরা’, ‘ওগো বধূ সুন্দরী’। এভাবেই তিনি পূরণ করেছিলেন নিজের ৫০০টি ছবির লম্বা দৌড়।

অভিনেত্রীর বিয়ে হয়েছিল প্রযোজক শসধর মুখোপাধ্যায়ের সাথে, দুটি সন্তানও হয়েছিল এই বিয়েতে। তবে সংসার জীবন সুখের ছিল না, তাই হয়েছিল ডিভোর্স। তবে এরপরে সঙ্গ পেয়েছিলেন প্রযোজক রবীন্দ্রনাথ মালোত্রার, লিভইন রিলেশনে ছিলেন দুজনে। তবে সমাজ আর ইন্ডাস্ট্রি ভালো চোখে দেখেনি এসব, সবসময়ই কটুক্তি শুনতে হয়েছিল তাঁদের। ইন্ডাস্ট্রিও অভিনেত্রীর এতদিনের সেবার কোনো দাম দেয়নি, অর্থাৎ অভিনয়ের জন্য পুরষ্কৃত তিনি কখনোই হননি। জীবনে অনেক অবসাদে ভুগছিলেন তিনি, তাই একটি সময় সবকিছু শেষ করে আত্মহত্যারও পথ বেছে নিয়েছিলেন তিনি, তবে সফল হননি। অবশেষে ২০০৩ সালের ২১শে মে নিজের হাসি নিয়ে পাড়ি দিলেন তারাদের দেশে, আজ তিনি যেখানেই আছেন ভালো আছেন।

 

Back to top button

Ad Blocker Detected!

Refresh