শনিবার ব্রেন স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন ‘ডিস্কো ডান্সার’ মিঠুন চক্রবর্তী। অভিনেতার মস্তিষ্কের ইস্কেমিক সেরিব্রোভাসকুলার অ্যাকসিডেন্ট (স্ট্রোক) ধরা পড়েছিল। বর্তমানে তিনি সম্পূর্ণ সুস্থ এবং নরম খাদ্য গ্রহণ করছেন। ১২ ফেব্রুয়ারী সোমবার তাকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে ও দেওয়া হয়েছে।
নিজের পায়ে হেঁটে একেবারে খোশ মেজাজে হাসপাতাল থেকে বেরোলেন মিঠুন চক্রবর্তী। হাসপাতাল থেকে বেরিয়েই ভক্তদের উদ্দেশ্যে হাত নেড়ে সৌজন্য বিনিয়ম করে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হলেন তারকা। অতিরিক্ত খাওয়ার জেরেই যে তিনি অসুস্থ হয়েছেন সেকথা উল্লেখ করে মহাগুরু স্পষ্ট বলেন, “কোনও সমস্যা নেই। সমস্যা খাওয়াতে।
আমি গোগ্রাসে খাই। যাঁদের ডায়াবিটিস রয়েছে, ভাববেন না মিষ্টি না খেলে কিছু হবে না। খাওয়া নিয়ন্ত্রণ করুন। আমার সমস্যা, বেশি খেয়েছি। আমি রাক্ষস। বকা খেলাম।”
তবে এখন অভিনেতা একদম ফিট। কিন্তু তিনি যে দ্রুত খাদ্যাভ্যাসে বদল আনার চেষ্টা করবেন তার জন্য শপথ নিলেন মহাগুরু। এরপরেই সেখান থেকে দাঁড়িয়ে রাজনীতির ময়দানে ঢুকে পড়লেন অভিনেতা। সুস্থ হতেই লোকসভা ভোটের চিন্তা করতে দেখা গেল মিঠুনকে। তবে তিনি সাফ জানিয়ে দিলেন যে তিনি প্রার্থী হবেন না।
প্রবীণ অভিনেতা বিজেপির উত্থানের সময়ের কথা উল্লেখ করে বলেন, “আমি প্রার্থী হলে বাকি ৪২টা কেন্দ্রের কী হবে ? বিজেপি করব। আমাদের রাজ্যের বাইরে অন্য রাজ্যে ডাকলে, তা-ও যাব। বিজেপির উত্থানের সময় এসেছে।”
সেই সঙ্গে মিঠুন সাংবাদিকদের সাথে কথা বলার সময় প্রকাশ করেন যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তাকে স্থিতিশীল হওয়ার পরে ফোন করেছিলেন। তিনি বলেন যে প্রধানমন্ত্রী মোদী তাকে তিরস্কার করেছেন। অভিনেতা-রাজনীতিবিদ বলেছেন যে প্রধানমন্ত্রী মোদী তাকে নিজের যত্ন না নেওয়ার জন্য তিরস্কার করেছেন।
সংবাদমাধ্যমকে মিঠুন প্রধানমন্ত্রীর বিষয়ে জানিয়েছেন যে, “তার স্বাস্থ্যের যত্ন না নেওয়ার জন্য তাকে তিরস্কার করা হয়েছে।” সেই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী যে তাঁকে ফোন করে খোঁজখবর নিয়েছেন সেই প্রসঙ্গে অভিনেতা জানান, “দারুণ শ্রদ্ধা করি প্রধানমন্ত্রীকে।” তাছাড়া, মিঠুনও প্রকাশ করেছেন যে তিনি এখন ভালো বোধ করছেন।
তাঁর কথায়, “আসলে কোন সমস্যা নেই, আমি একদম ভালো আছি। আমার খাদ্যাভ্যাস নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।” এর পাশাপাশি সোমবার শুভেন্দুর সন্দেশখালি যাত্রা রুখে দিয়ে ফের বিজেপির চোখে ভিলেন রাজ্য-পুলিশ। এ নিয়ে মিঠুন সাফ বললেন, “শুভেন্দুকে আটকে কী হবে ? ও ভেঙে বেরিয়ে যাবে। ও খুব শক্তিশালী নেতা। আটকে কোনও লাভ নেই।”
তৃণমূল বিধায়ক তথা অভিনেতা সোহম চক্রবর্তী প্রযোজিত ‘শাস্ত্রী’-র শ্যুটিংয়েই কলকাতায় এসেছিলেন মিঠুন চক্রবর্তী। মাঝপথে অসুস্থ হওয়ায় শুটিং নিয়েও চিন্তিত অভিনেতা। রবিবার হাসপাতালের বিছানায় শুয়েই তিনি বিজেপির সুকান্ত মজুমদারকে বলেছেন, “কাল থেকে শুটিং করতে পারেই ভালো হত।”
তবে চিকিৎসকরা আপতত সম্পূর্ণ বিশ্রামের পরামর্শ দিয়েছেন অভিনেতাকে। অভিনেতার মস্তিষ্কের ইস্কেমিক সেরিব্রোভাসকুলার অ্যাক্সিডেন্ট (স্ট্রোক) ধরা পড়ে গত শনিবার।
ওইদিন সন্ধ্যায় হাসপাতালের তরফে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছিল অভিনেতাকে ডান, উপরের এবং নীচের অঙ্গগুলিতে দুর্বলতার অভিযোগ নিয়ে হাসপাতালে আনা হয়েছে। মস্তিষ্কের এমআরআই সহ প্রয়োজনীয় পরীক্ষাগার এবং রেডিওলজি তদন্ত করা হয়েছিল।
বর্তমানে অভিনেতা প্রয়োজনীয় চিকিৎসা নিচ্ছেন এবং একজন নিউরো-চিকিৎসক, কার্ডিওলজিস্ট এবং একজন গ্যাস্ট্রোএন্টেরোলজিস্ট সহ চিকিৎসকদের একটি দলের পর্যবেক্ষণে রয়েছেন তিনি।
