শতাব্দীর বাড়িতে গিটার পর্যন্ত পাঠিয়ে দিয়েছিলেন কিংবদন্তি পরিচালক তরুণ মজুমদার! স্মৃতিচারণায় কী বললেন শতাব্দী?
তাপস পাল, মৌসুমী চট্টোপাধ্যায়,মহুয়া রায়চৌধুরীর মতো জনপ্রিয় অভিনেতা অভিনেত্রীদের প্রথম ব্রেক দিয়েছিলেন তরুণ মজুমদার। বাংলা চলচ্চিত্রের জগতে তিনি নিজস্ব ঘরানা তৈরি করেছিলেন। তার পরিচালিত বালিকা বধূ, দাদার কীর্তি, ভালোবাসা ভালোবাসা, দাদার কীর্তি, গণদেবতা, চাঁদের বাড়ি, আলো ইত্যাদি ছবিগুলো ছিল বহুল প্রশংসিত। কিংবদন্তি এই বাঙালি পরিচালকের মৃত্যুতে শোকে মূহ্যমান হয়ে উঠেছে চলচ্চিত্র জগৎ। ভিন্ন ধরনের ছবিতে উজ্জ্বল নিদর্শন রেখে যাওয়া এই পরিচালকের মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন বাংলা চলচ্চিত্রের দাপুটে অভিনেত্রী শতাব্দী রায়।
তরুণ মজুমদারের ব্লকবাস্টার ছবি ‘আপন আমার আপন’ও বহুল প্রশংসিত ছবি ‘পরশমণি’তে কাজ করেছিলেন শতাব্দী। পরিচালকের মৃত্যুতে শতাব্দী বলেন, “তরুণ মজুমদারের জীবনাবসান বাংলা দর্শকদের জন্য বিরাট ক্ষতি। কারণ তিনি যে ছবি তৈরি করেছেন তা বাণিজ্যিক ছবি কিন্তু প্রতিটি মানুষের কাছে পৌঁছেছে। তাদের মন ছুঁয়েছে। যে অভিনেতারা তার সঙ্গে কাজ করার সুযোগ পাননি তারা এমন একটা ব্যক্তিত্বকে হারালেন যার সঙ্গে কাজ না করলেও শুধু কথা বললেও অনেক কিছু শেখা যেত। তিনি শিল্পীকে হাতে ধরে শেখাতেন। শিল্পীদের সম্মান দেওয়া তার কাছে শেখার ছিল।”
অতীতে কাজ করার অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিয়ে এদিন অভিনেত্রী বলেন,“ আমি দুটি ছবিতে তার সঙ্গে কাজ করার সুযোগ পেয়েছিলাম। এর মধ্যে পরশমণিতে গ্রামের মেয়ে এবং আপন আমার আপনে একেবারে মডার্ন চরিত্র। তিনি একটা স্ক্রিপ্ট কীভাবে চাইছেন তা তিনি বোঝাতেন। তিনি নিজেই অভিনয় করে বোঝাতেন তিনি কী চাইছেন। আপন আমার আপনে সাতজন বোনের চরিত্র ছিল। ছবির স্ক্রিপ্ট অনুযায়ী সকলেই মিউজিকাল ইন্সট্রুমেন্ট বাজাতে পারতো। ছবিতে যাতে শিল্পী সবটা উজাড় করে দিতে পারে সেজন্য সাত জনকেই তিনি বাড়িতে গিটার এবং অন্যান্য মিউজিকাল ইন্সট্রুমেন্ট পাঠিয়ে দিয়েছিলেন যাতে তারা বাড়িতে তা শিখে সেটে আসতে পারেন। এভাবে পর্দায় কোন চরিত্রকে তুলে ধরতে যে একাগ্রতার প্রয়োজন এই টিপসগুলি তার থেকে শেখা।”
উল্লেখ্য, গত ১৪ই জুন কিডনিজনিত সমস্যার কারণে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয় কিন্তু তার অবস্থার অবনতি হতে থাকলছ তাকে ভেন্টিলেশনে রাখা হয়েছিলো। গত রবিবার থেকে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হচ্ছিল আজ সোমবার সকালে সমস্ত চেষ্টাকে ব্যর্থ করে সকাল ১১ টা ১৭ মিনিটে এস এস কে এম হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন বাংলার কিংবদন্তি এই পরিচালক।