নবম শ্রেণী থেকে ১৪ টা সার্জারি, শরীরে বাসা বেধেছে ক্যান্সার! ভগবানের কাছে “অন্য শরীর” প্রার্থনা স্বাগতালক্ষ্মীর
স্বাগতালক্ষ্মী দাশগুপ্ত, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের একনিষ্ঠ শিষ্যা তিনি। গীতবিতানের সব গান রেকর্ড করে রবীন্দ্রসঙ্গীতের জগতে রীতিমতো ইতিহাস রচনা করেছেন তিনি। ভাগবত গীতা আর রবীন্দ্রনাথ রয়েছেন তাঁর জীবনজুড়ে।
সারা জীবন ধরে গানের সাধনা করে গিয়েছেন তিনি। এখনো পর্যন্ত নিজেকে সংগীতের ছাত্রী হিসেবেই দেখেন স্বাগতালক্ষ্মী। ভগবত গীতা-র সঙ্গে ১৮টা রবীন্দ্রসঙ্গীতকে জুড়ে সৃষ্টি করেছেন’গীতাবিতান’। তবে সংগীতের এই স্বাধিকা ছোট থেকেই দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত।
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে স্বাগতালক্ষ্মী জানিয়েছেন, নবম শ্রেণী থেকেই বেঁচে থাকার জন্য লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। নারান অসুস্থ তাই জর্জরিত গায়িকা। তাই ভগবানের কাছে তাঁর একটাই প্রার্থনা, পরের জন্মে ঈশ্বর যেন তাঁকে একটা সুস্থ স্বাভাবিক শরীর দান করেন।
আরও পড়ুন : “ছিঃ! অসভ্যতামো” ছেলের ঠোঁটে ঠোঁট রেখে চুমু শুভশ্রীর! ধেয়ে এল কটাক্ষের ঝড়
বেঙ্গলি মিউজিক ডিকশনারি নামে এক ইউটিউব চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নিজের আক্ষেপ প্রসঙ্গে গায়িকা জানান,”কম-বেশির কথা তখন ভাবব যখন আমার আকাঙ্খা থাকবে। আমার আশেপাশের মানুষরা আমাকে ভালোবেসে বলেন, তুমি এটা কেন পেলে না? তাঁরা যে আমাকে ভালোবেসে বলছেন সেটা তো আমার কাছে অ্যাওয়ার্ডের চেয়ে কমকিছু নয়। আমাকে সকলে বলে আমার সহনশীলাতা একটু বেশি”।
নিজের শরীরে থাকা দুরারোগ্য ব্যাধি ক্যান্সার নিয়ে লড়াই করা সম্পর্কে স্বাগতালক্ষী বলেন,”যখন সব মানুষজন জেনেছে আমার ক্যানসারের লড়াই চলছে, সেইসময় আমার ক্যানসারের লড়াইটা সবচেয়ে কম ছিল। খবর হওয়াটা সবসময় ঠিকঠাক সময়ে হয় না। আমার লড়াই শুরু ক্লাস নাইন থেকে।
জানি, যে শরীর ঈশ্বর আমাকে দান করেছে, তাতে প্রচুর গোলযোগ। সেইসময় থেকে আমার নর্ম্যাল লাইফ নেই। সেটা বৃহৎ আকার ধারণ করল ২০১৯-এ। এরপর কেমোথারপি, আরও অনেককিছু হল। খবরটা হয়েছে তার পরে। যে সময় আমি মুম্বইতে শো করতে গেলাম।”
ইন্ডাস্ট্রিতে স্বাগতালক্ষ্মীর অসুস্থতা নিয়ে অনেকেই তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করেছিলেন। তবে সহনশীলতাকে সঙ্গী করে সেই সব কথা ছেড়ে জবাব দিয়েছেন তিনি। জীবন নিয়ে আক্ষেপ প্রকাশ করে তিনি বলেন,”আমাকে ঈশ্বর একটু ভালো স্বাস্থ্য দিতে পারতেন। যদি আবার জন্মাই যেন একটু ভালো শরীর নিয়ে জন্মাই।
এই লড়াইটা একটু বেশি হয়ে গিয়েছে। আমার এই যুদ্ধটা না থাকলে আমি…আমার প্রায় ১২-১৪টা সার্জারি হয়েছে শরীরে। সেই সময়টা আমি কিছু করে উঠতে পারিনি।”
শরীর অসুস্থ থাকলে ও নিজের গান প্রসঙ্গে স্বাগতালক্ষ্মী বলেন,”আমি শ তিনেক গান লিখেছি। তবে আমার কাছে আমার গান খুব কম শুনতে চায় লোকে। এটা তো রবীন্দ্রথানের জয়, উনি এমন কিছু করেছেন, যে আমাদের গ্রাস করে নিয়েছেন। উনি আমাদের বেঁধে রেখেছেন। এটা এক আশ্চর্য জেলখানা, যেখান থেকে বেরোতে ইচ্ছে করে না। সেই জেলখানাতেই মুক্তির স্বাদ।”