বলিউড

ছেলে সানির ক্যারিয়ার বাঁচাতে মিঠুনের সামনে হাতজোড় করেছিলেন ধর্মেন্দ্র! মহাগুরু একটা সিদ্ধান্তের জন্যই আজ সানিকে চিনল বলিউড

হিন্দি বিনোদন জগতের ৮ থেকে ৮০ প্রত্যেকেই সানি দেওয়ালের(Sanny Deol) নাম জানেন। অ্যাকশনে হিরো হিসেবে ৮০ থেকে ৯০ এর দশকে বেশ পরিচিত তৈরি করেছিলেন তিনি। নিজের ক্যারিয়ারে ১০০ টির বেশি হিন্দি ছবিতে অভিনয় করেছেন সানি। ধর্মেন্দ্র জ্যেষ্ঠ পুত্র হওয়ার কারণে ইন্ডাস্ট্রিতে খুব সহজেই পরিচিতি পেয়েছিলেন।

১৯৮৩ সালে বেতাব ছবির মধ্যে দিয়ে বলিউডে পা রাখেন তিনি। প্রথম ছবিতে অভিনয় করেই বাজিমাত করেছিলেন। তারপর একটার পর একটা হিট ছবি উপহার দিয়েছেন সময়ের সঙ্গে সঙ্গে। সাবেরীওয়ালী গাড়ি, রাম অবতার এই ছবিগুলিতে অভিনয় করলেও বক্স অফিসে তেমনভাবে ব্যবসা করতে পারেনি সানির ছবিগুলি। কার্যত মুখ থুবড়ে পড়েছিলেন অ্যাকশন হিরো। কাজ পাচ্ছিলেন না কোন পরিচালকের থেকেই।

পরপর দশটি ছবি ফ্লপ করে তার। স্বাভাবিকভাবেই ছেলের ক্যারিয়ার নিয়ে চিন্তায় পড়ে গিয়েছিলেন ধর্মেন্দ্র। ছেলে কি আবার ক্যারিয়ারে সফল হতে পারবে? তার জন্য পুরো চেষ্টা করেছিলেন বাবা হয়ে। কিন্তু বলিউডে কোন ছবি নির্মাতাই সানিকে আবার নতুন করে কাজ দিতে রাজি হচ্ছিলেন না। ঠিক সেই সময় ধর্মেন্দ্র কানে আসে প্রযোজক রাজকুমার সন্তোষী (Rajkumar Santoshi)নতুন একটি অ্যাকশন ছবির কাজ করছেন।

সেটি শোনা মাত্রই ছুটে গিয়েছিলেন ধর্মেন্দ্র। ট্রিপ শোনার পর পছন্দ হয় তার কিন্তু রাজকুমার চলিতে সানিকে কিছুতেই সুযোগ দিয়েছিলেন না। এমনকি ধর্মেন্দ্রর অনুরোধ পর্যন্ত ফিরিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। রাজকুমার জানিয়েছিলেন ছবিতে নায়ক হিসেবে যদি কেউ অভিনয় করে সেটা শুধুমাত্র মিঠুন চক্রবর্তী আর কেউ নয়। অন্যদিকে মিঠুন(Mithun Chakraborty) সেই স্ক্রিপশনে ইতিমধ্যে যুক্তিতে সইসাবুদ করে ফেলেছিলেন।

তখন ধর্মেন্দ্র ছুটে গিয়েছেন মিঠুনের কাছে। তিনি রীতিমতো হাতজোড় করে অনুরোধ করেছিলেন মিঠুনকে এই ছবি থেকে সরে দাঁড়াতে। জানিয়েছিলেন মিঠুন যদি রাজকুমারের ছবি দেখে সরে যান তাহলে সানি সেই চরিত্রে অভিনয় করবেন। সানির কেরিয়ার সম্পর্কেও মিঠুনকে অবগত করেন তিনি।

ভীষণ শ্রদ্ধা করতেন তিনি সেই কারণে তার অনুরোধ ফেলতে পারেননি। নিজেকে সরিয়ে নিয়েছিলেন রাজকুমারের ছবি থেকে। সেই সময় মিঠুনের হাতে প্রচুর ছবির কাজ ছিল। একসঙ্গে কুড়িটি ছবিতে কাজ করেছিলেন তিনি। রাজকুমারের ছবি ছেড়ে দিলে তাই আপত্তি হয়নি তার। যদিও পরের রাজকুমারের অ্যাকশন ছবিটি মুক্তি পায় এবং সেই ছবি প্রযোজনার দায়িত্ব নিয়েছিলেন ধর্মেন্দ্র নিজেই।

১৯৯০ সালে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছিল ঘায়েল। যেখানে অভিনয় করে সানি আবার প্রশংসা কুরিয়েছিলেন। বলিউড সূত্রে খবর সানির কেরিয়ার আবার তৈরি করেছিলেন মিঠুন চক্রবর্তী। কারণ তিনি যদি ওই ছবিতে অভিনয় না করতেন তাহলে সানি আর কোনো ছবিতে কাজ পেতেন না। ঘায়ের ছবি প্রসঙ্গে পুরনো এক সাক্ষাৎকারে অভিনেতা জানিয়েছেন, পরিচালক গোবিন্দ নিহালনির সহকারী হিসেবে কাজ করতেন রাজ। ঘায়েল ছবি চিত্রনাট্য লেখার পরে পরিচালনায় হাতে খড়ি করেছিলেন তিনি।

তার কাছ থেকেই ছবি চিত্রনাট্য শুনেছিলেন তিনি। কিন্তু কোন প্রযোজক পাচ্ছিলেন না হিসেবে প্রথম কাজ করেছেন হিরো হিসেবে তিনি। সানি দেওয়ালের কথা অনুযায়ী, বহু পরিচালক নাকি তাকে বারণ করেছিলেন ছবিটি বানাতে কারণ ঘায়েল ছবিটি মুক্তি পেলেও একেবারেই চলবে না এটি অনেকেই বলেছিলেন তাকে। কেউ কেউ আবার ছবি প্রযোজনার বিনিময়ে ছবিতে বদল চেয়েছিলেন। কিন্তু সানি বা রাজ কেউই চিত্রনাটে কোনরকম বদল করেন নি। তাই শেষ পর্যন্ত ধর্মেন্দ্রর কাছেই ছুটে গিয়েছেন দুজনে।

ধর্মেন্দ্র তার নিজস্ব সংস্থা থেকে ছবিটি প্রযোজনা করেন এবং পুত্রের অনুরোধে মুক্তি পায়ে ছবিটি। সানির ক্যারিয়ারের ঘায়েল অন্যতম সফল একটি মাইল ফলক।

Back to top button

Ad Blocker Detected!

Refresh