মোটা টাকা স্যালারি ছেড়ে ৪ বন্ধু মিলে শুরু করেছিল দুধ বিক্রি, আজ বার্ষিক ৯০ কোটির টার্নওভার, বর্তমানে তারা প্রত্যেকেই কোটিপতি
কোন কাজে সাফল্য পেতে গেলে নিশ্চিতভাবে কঠোর পরিশ্রমের প্রয়োজন হয়। কোন কিছুই এমনি এমনি হয় না। এই কথা আবারও প্রমাণ করলো চার বন্ধু। নিজেদের নিশ্চিত মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানির চাকরি ছেড়ে ব্যবসার দুনিয়ায় চলে এসেছে তারা। অনেক বাধা-বিপত্তি পেরিয়ে ব্যবসায়ী হিসেবে আজ তারা সফল। বর্তমানে তারা প্রত্যেকে কোটিপতি।
একসময় ব্যবসার উদ্যোক্তা অভিনব বিদেশে একটি মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানির সিএ ছিলেন। কিন্তু সেই চাকরি করতে করতে তিনি রীতিমতো বিরক্ত হয়ে গিয়েছিলেন। ৯-৫’টার জীবনে একঘেয়েমি বারছিল তার। তাই নিশ্চিত চাকরি ছেড়ে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তিনি। সাথে পাশে পেয়েছিলেন তার চার বন্ধুকেও। বিদেশে থাকাকালীন এই ব্যবসার চিন্তা মাথায় আসে অভিনবর। আর সেই চিন্তা থেকেই তিনি তার বেশ কয়েকজন বন্ধুকে বলেন এবং তাদের মধ্যে কয়েকজন তার সাথে অংশীদারিতে ব্যবসা করতে রাজি হয়ে যান। অভিষেক রাজ, হর্ষ ঠক্কর, রাকেশ শর্মার সাথে মিলে এই ব্যবসা অভিনব শুরু করেছিলেন ২০১২ সালে।
ব্যবসা শুরু হওয়ার দু’বছর পর ২০১৪’তে ‘ওসাম ডেয়ারির’ নাম নিবন্ধিত করান। নয় বছর ধরে বিদেশে চাকরি করার সময় দুধ শিল্পের কাজ দেখেছিলেন সেখানে। সেই থেকেই এই ব্যবসা করার ইচ্ছে জন্মায় তার মনে। সেখানে তিনি বার্ষিক ৪০ লাখ টাকা পেতেন। তবে সব ছেড়ে তিনি চলে আসেন দেশে। পাশাপাশি চলে আসেন তার তিন বন্ধুও। উল্লেখ্য, তাদের এই ডেয়ারি ঝাড়খন্ডে অবস্থিত। বর্তমানে তাদের ডেয়ারির নাম দেশের বাইরেও পৌঁছে গিয়েছে।
চার বন্ধু এক কোটি টাকা দিয়ে মোট চার কোটি টাকা বিনিয়োগে এই ব্যবসা শুরু করেছিল। তবে পরবর্তীকালে একাধিক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছিল তাদের। তবে সমস্ত বাধা কাটিয়ে তারা বর্তমানে প্রতিষ্ঠিত। ব্যবসা শুরু করার আগেই অভিনব একটি কোর্স করেছিলেন যেখানে ব্যবসা সম্পর্কে সমস্ত জ্ঞান অর্জন করেছিলেন তিনি। তবে তাও শুরুতেই বড় ধাক্কা খেয়ে ছিলেন তারা।
৩৫ ব্লাক দিয়ে ৪০’টি গরু কেনার পর ২৬’টি গরু আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছিল। পরবর্তীকালে তারা ৫০ লাখ টাকায় ১০০ টি হলস্টেইন ফ্রিজিয়ান গরু কিনেছিলেন। এক্ষেত্রে তাদের খরচাটা অনেকটাই বেড়ে গিয়েছিল। জমি কিনে ডেয়ারি তৈরি করতেও ভালোই খরচা হয়েছিল তাদের। পরবর্তীকালে উপযুক্ত প্রশিক্ষণ নিয়ে বিশেষজ্ঞদের মতামত নেওয়ার পরই এগোন তারা। কেউই সেইসময় হাল ছাড়তে রাজি ছিলেন না। তবে তারপর থেকেই ৬ মাসের মধ্যেই তারা লাভবান হতে শুরু করেন। বর্তমানে বছরে কোটি কোটি টাকার টার্নওভার হয় তাদের। ব্যবসার জন্য সব ছাড়তে রাজি ছিল এই চার বন্ধু, কিন্তু হাল ছাড়তে নয়। যার ফলাফল তারা হাতেনাতেই পেয়েছে। বর্তমানে তারা সফল ব্যবসায়ী।