প্রসেনজিৎ-ঋতুপর্ণা অভিনীত বাংলা ছবির থেকে গল্প টুকে তৈরি হয়েছে ‘পিলু’র রঞ্জা-মল্লারের রসায়ন! ধারাবাহিক কে তুমুল ট্রোল নেটজনতার
জি বাংলার জনপ্রিয় ধারাবাহিক পিলু নিয়ে বর্তমানে দর্শকদের এক অংশের মানুষ নিজেদের ক্ষোভ উপড়ে দিচ্ছেন। তাদের বক্তব্য“মল্লার রাগের বশে রঞ্জার কফিতে বিষ মিশিয়ে দিচ্ছে, পরক্ষণেই আবার অনুতাপে জর্জরিত হয়ে তাকে বাঁচানোর জন্য হাসপাতালে ভর্তি করছে, অন্যদিকে রঞ্জাও এরকম আচরণ দেখে তার প্রতি গলে গিয়ে পুলিশের হাত থেকে তাকে বাঁচাচ্ছে-এটা কি ঠিক হচ্ছে? ধারাবাহিকের মুখ্য চরিত্র পিলুকে দেখানো হচ্ছে ঠাকুরপো বলতে অজ্ঞান! মল্লার যে এত বড় একটা অন্যায় করলো তার কোন শাস্তি নেই, তার মধ্যে অনুতাপ দেখিয়ে তাকে হিরো সাজানো হচ্ছে- এইভাবে তো বাংলা ধারাবাহিকের মধ্যে বধূ নির্যাতনের কনসেপ্ট কে উসকে দেওয়া হচ্ছে!”নেটিজেনদের একাংশের মানুষ যখন বলছেন এতকিছুর পরেও মল্লার এবং রঞ্জা জুটি কী করে এতোটা পপুলার হচ্ছেন? বধূ নির্যাতন,নারী অত্যাচারের মধ্য দিয়ে স্বামী স্ত্রীর মধ্যে প্রেম গড়ে ওঠা এমনটা মেনে নেওয়া যায় না, সেখানে মুখ্য চরিত্রের থেকেও গৌণ চরিত্র কীভাবে এতটা ইম্পর্টেন্স পাচ্ছে? সেখানে নেটিজেনদের অপর অংশ বলছেন, এই কনসেপ্ট কিন্তু নতুন নয় এই কনসেপ্ট বেশ পুরনো। এর আগের জনপ্রিয় দুটি বাংলা সিনেমাতেও এই কনসেপ্ট বেশ ভালো মতো জনপ্রিয়তা লাভ করেছিল।
হ্যাঁ একজন নারীকে অত্যাচার করার মধ্য দিয়ে সেই নারী পুরুষের মধ্যে প্রেম গড়ে ওঠা এবং স্ত্রীর ওপর যারপরনায় অত্যাচার করার মধ্য দিয়ে স্বামী স্ত্রীর মধ্যে ভালোবাসা গড়ে ওঠার এই গল্প এর আগে বাংলা দুটি সিনেমায় দেখানো হয়েছে এবং বলাই বাহুল্য সেই দুটি সিনেমা বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করেছিলো। সেই দুটি বাংলা সিনেমাতেও নায়কদের এইরকম আচরণ করার পিছনে মনস্তাত্ত্বিক কারণ দেখানো হয়েছিলো আর তা মানুষ বুঝেও ছিলেন। সেই একই বিষয়ে দেখানো হচ্ছে পিলুতেও। পিলুতেও মল্লারের আচরণকে জাস্টিফাই করা হচ্ছে মনস্তাত্ত্বিক কারণ দেখিয়ে।
প্রসেনজিৎ চ্যাটার্জী ও ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত জনপ্রিয় ছবি ‘আঘাত’- যেখানে দেখানো হয় প্রসেনজিৎ একরাত্রে হাতে সিঁদুর নিয়ে ঋতুপর্ণার বাড়িতে ঢোকে ও তার সিঁথিতে জোর করে সিঁদুর পরিয়ে তার ওপর অত্যাচার করে (স্বামীর অধিকার ফলায়)- এই ঘটনার পর দেখানো হয় যে ঋতুপর্ণা প্রসেনজিৎ কে ভালোবেসে ফেলে এবং স্বামী হিসেবে মেনে নেয়! তার দেওয়া সিঁদুর মাথায় পরে।( প্রসেনজিতের এইরকম অন্যায় অত্যাচারের পিছনে মনস্তাত্ত্বিক কারণ দেখানো হয়েছিল সেই সিনেমাতেও)
অপর সিনেমাটি হল সুদীপ মুখার্জী ও মেঘনা হালদারের জনপ্রিয় ছবি ‘প্রেম রোগ’। যেখানে দেখানো হয়েছিল স্বামী কারণে-অকারণে তার স্ত্রীর উপর বিভিন্নভাবে অত্যাচার করে সেই স্বামীকেই পরে ভালবেসে ফেলে তার স্ত্রী! স্বামীর অত্যাচারের মধ্যেই সে ভালোবাসা খুঁজে পেয়েছিল! (উল্লেখ্য এখানেও স্বামীর এইরকম আচরণ করার পিছনে মনস্তাত্ত্বিক কারণ এবং ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছিল)- অর্থাৎ প্রথম পিলু নয় এর আগেও বাংলা চলচ্চিত্রে এই কনসেপ্ট এসেছে এবং জন মানসের মধ্যে তা নিয়ে কোন বিরূপ প্রভাব তৈরি হয়নি বরং মানুষ ভিড় করে সেইসব সিনেমা দেখতে গিয়েছেন। একসময় সিনেমায় প্রসেনজিৎ চ্যাটার্জী ও সুদীপ মুখার্জী যে অত্যাচারিত পুরুষ ও স্বামীর চরিত্রে অভিনয় করেছেন ও পরবর্তীতে সেই অত্যাচারিতার মনে জায়গা করতে সফল হয়েছেন সেই চরিত্রই আজ ছোট পর্দার মল্লার!