‘নিজে রোজগার করে নিজের মুখে ভাত তুলতে চায় ফুলঝুরি! বাবা-মা বা স্বামীর টাকার পরোয়া করে না সে!’ বাংলা ধারাবাহিক আজও সমাজকে শিক্ষা দেয় ধুলোকণায় তার প্রমাণ বলছেন নেটিজেনরা
ধারাবাহিক মানেই শুধু কুটকাচালি, পরনিন্দা, পরকীয়া এই ভাবতে ভাবতে বাঙালি দর্শক যখন অভ্যস্ত হয়ে উঠেছেন তখন ধুলোকণার সাম্প্রতিককালের এপিসোড একটা বড় চমক দিল সকলকে। হ্যাঁ সমাজে এখনও কিছু মানুষ আছেন(সবাই নয়, কিছু জনের কথা বলা হয়েছে) যারা শিক্ষিত আধুনিকা পড়াশুনা শিখেও আধুনিক মননের অধিকারী হতে পারেন না। শহরে শিক্ষিতা হওয়ার পরেও সেই সব মেয়েদের মেন্টালিটি থাকে বড় লোক মানুষ দেখে বিয়ের পর নিশ্চিন্ত হবো অথবা বাবা-মা ধনী হলে চিন্তা করবার কিছু নেই, কারণ তাদের রোজগারেই তার চলে যাবে- যেই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে বস্তিতে বড় হওয়া লোকের বাড়িতে কাজ করা একটি মেয়ে ফুলঝুরর আধুনিক মনস্ক রূপ সকলকে অবাক করে দিচ্ছে।
যে ফুলঝুরি লালনের অসুস্থতার খবর শুনে মন্দিরে প্রায় হত্যে দিয়ে পড়েছিল সেই মেয়েটি কিনা বিয়ের পর বৌভাতের দিনে তার স্বামী যখন তার সকল দায়িত্ব গ্রহণ করে ভাত কাপড়ের দায়িত্ব নেওয়ার কথা বলে তখন সে স্বামীর দায়িত্ব নেওয়ায় আহ্লাদিত না হয়ে নিজে স্বাবলম্বী হওয়ার কথা বলে। নিজের পায়ে দাঁড়ানোর কথা বলে, নিজে রোজগার করার কথা বলে ও নিজের রোজগারে পরিবারের ও সকলের পাশে দাঁড়ানোর কথা বলে।
বৌভাতের সময় লালন যখন ফুলঝুরির দায়িত্ব নেয় তারপর ফুলঝুরি বলে, আমি ভগবানের কাছে প্রার্থনা করি ভগবান যেন আমার হাত পা সচল রাখেন আমি যেন নিজে কাজ করে নিজে খেতে পারিনি। নিজের ভাতটুকু যেন নিজে জোগাড় করতে পারি এবং অন্যদের জন্যও যেন করতে পারি। এরপর যখন ফুলজুরির মা বলে যে, এখন তো আমি আর তোর বাবা দুজনেই আছি। আমাদের রোজগারও ভালো। আমাদের যা কিছু সবই তো তোর। তোকে এখন কাজের জন্য চিন্তা করতে হবে না। তখন ফুলঝুরি বলে যে, “মা, আমার মা-বাবার কী আছে তা দেখে আমার লাভ নেই। আমার স্বামীর কী আছে তাতেও আমার কিছু না, আমাকে নিজেকে রোজগার করতে হবে নিজেকে কাজ করতে হবে।”- বস্তিতে বড় হয়ে ওঠা ফুলঝুরির এই স্বাবলম্বী হওয়ার মানসিকতা নিঃসন্দেহে শিক্ষণীয়, ধারাবাহিকের মধ্যে একজন নায়িকার চরিত্র যখন একথা বলে তখন ধারাবাহিক থেকে নিঃসন্দেহে শিক্ষা লাভ হয়-এমনটাই মনে করছেন নেটিজেনরা।