বাংলা সিরিয়াল

বিজয়ী হওয়ার পর থেকেই একটার পর একটা তীর আসছে পদ্ম পলাশের দিকে! ‘স্বজন-পোষণ’, ‘গুরুজীর ছাত্র তাই বিজয়ী’, আর না! অবশেষে বিতর্কের বিরুদ্ধে জবাব দিলেন পদ্ম পলাশ

সারেগামাপা ২০২২(Saregamapa 2022) এর সফর। রবিবার রাতেই জি বাংলা(Zee Bangla)র রিয়ালিটি শো(Reality Show) বেছে নিয়েছে তাদের সেরা গাইয়েকে। যুগ্মভাবে বিজয়ী হয়েছেন অঙ্কিতা এবং পদ্ম পলাশ। তবে বিজয় হবার পর থেকেই লক্ষীকান্তপুরের ছেলে পদ্ম পলাশ(Padma Palash Haldar) শুভেচ্ছার পাশাপাশি বিতর্কের বাণেও বিদ্ধ হচ্ছেন।

এবার হিন্দুস্তান টাইমস বাংলার কাছে নিজের মনের কথা ভাগ করে নিলেন গায়ক। স্বাভাবিকভাবেই প্রথম প্রশ্ন ছিল বিজয়ী হওয়ার পর সাফল্যকে কেমন ভাবে দেখছেন? মন খুলে দিলেন জবাব। বললেন,’খুবই আনন্দিত। আপনাদের মতো শুভাকাঙ্খী যাঁরা আমাকে এতদিন ধরে ভালোবেসেছে, সাপোর্ট করেছে, গান শুনে সমর্থন করেছে- খুবই ভালো। আমি লক্ষ্মীকান্তপুরের খুব সাধারণ এক কীর্তন ঘরের ছেলে। সাধারণ কীর্তন গাইতাম। জি সারেগামাপা আমাকে যে সুযোগ দিয়েছে, তার জন্য আমি গর্বিত এবং খুবই আনন্দিত। কীর্তন গানের জয় হোক এটাই চাইব। সব বিচারকরা আমাকে এত আর্শীবাদ এবং ভালোবাসা দিয়েছেন, তার জন্য আমি খুবই কৃতজ্ঞ। এটা জীবনের বিরাট বড় পাওয়া’।

পাশাপাশি জানালেন রবিবার রাত থেকে তার জীবনটা কতটা পাল্টে গেছে। অনবরত মানুষের ভালোবাসা ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ,হোয়াটস আপ, ফোন কল সবদিকে ভক্তদের ভালোবাসা ছড়িয়ে পড়ছে। দর্শকদের ভালোবাসায় ক্লান্ত হয়ে গেছেন জানিয়েছেন হাসতে হাসতে। সেইসঙ্গে শেয়ার করলেন তার ৮ মাসের সফরের স্মরণীয় কিছু অভিজ্ঞতা।

পদ্মপলাসের কথা অনুযায়ী,’পুরো আট মাসটাই আমার কাছে স্মরণীয়। যেদিন থেকে গ্র্যান্ড অডিশন হয়েছে, সেইদিন থেকেই প্রতিটা পারফরম্যান্স আমার কাছে স্মরণীয়। বিচারকদের থেকে আর্শীবাদ পেয়ে ভালো লাগছে। স্মরণীয় ঘটনা বলতে, একবার ট্রায়ো চ্যালেঞ্জ হয়েছিল, সেই চ্যালেঞ্জে সবাই কেঁদেছিল আমার গানে। শানুদার (কুমার শানু) গান যখন গেয়েছিলাম তখন রিচাজি (রিচা শর্মা) বলেছিলেন আমার ভয় করছে পদ্ম পলাশ এটা কেমন গাইবে? তবে গান শেষে মঞ্চে এসে উনি আমার প্রশংসা করেন এবং শানুদার গানে গলাও মেলান। ওটা একটা বড় পাওনা। যেদিন ফাইনালিস্ট চয়ন করা হচ্ছিল, সেইদিন আমি ‘শ্রীকৃষ্ণ গোবিন্দ হরে মুরারি’ গেয়েছিলাম। ওদিন সারেগামাপা-র মঞ্চে হাজির ছিলেন শ্রদ্ধেয় হৈমন্তী শুক্লা। আমরা পিসিমা বলি। তিনি হঠাৎ করে আমার গানে এমনভাবে কেঁদে ফেললেন ইমোশ্যানাল হয়ে… ভাবতেও পারিনি আমরা’।

তবে তার বিজয়ী হবার খবর সামনে আসার পর থেকে সোশ্যাল মিডিয়াতে শুরু হয়েছে অভিযোগের পালা। শুধুমাত্র কীর্তন গিয়ে প্রথম হয়েছেন পদ্ম পলাশ এমন অভিযোগে কি উত্তর দিতে চান তিনি। জানিয়েছেন,’যারা এই কথাগুলো বলছে, তাঁরা সারেগামাপা পরিষ্কারভাবে দেখেননি। কীর্তন আমার মূল সাবজেক্ট, সেটা বজায় রেখে আমি কিন্তু শুরু থেকেই অনেক ধরণের গান গেয়েছিলাম। আমি কিশোর কুমারের ‘গুরুদক্ষিণা’ গান গেয়েছিলাম, এবং পারফরম্য়ার অফ দ্য দে হয়েছিলাম। আমি লতা মঙ্গেশকরের ভজন গেয়েছি, লোকসঙ্গীত গেয়েছি, রবীন্দ্রনাথের গান গেয়েছি। কুমার শানু, অরিজিৎ সিং, মহম্মদ রফির গান গেয়েছি। তাহলে আমি সারা সিজন জুড়ে শুধু কীর্তন গাইলাম, তারা বলেন কী করে? যারা সমালোচনা করার তারা তো করবেনই, এটা তাঁদের বাক স্বাধীনতা। তবে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত যাঁরা প্রকৃত অর্থে সারেগামাপা দেখেছেন তাঁরা জানেন আমি সব ধরণের গান গেয়েছি’।

সেইসঙ্গে বললেন আলবার্ট কাবো দশকের পছন্দে প্রথম হয়েছে, চার লাখ টাকা পেয়েছে সেই নিয়ে ভীষণ খুশি। কাবো তার সাংগীতিক বন্ধু। তাই সংগীতের ময়দানে যাই হোক না কেন তাদের বন্ধুত্ব এখনো অটুট। এর মাঝে কোন খেদের জায়গা নেই। পাশাপাশি জানিয়েছেন কাবো মতই পাখিদের সঙ্গেও দারুন বন্ধুত্ব তার। কেউ হয়তো খেলার নিয়মে বাদ গিয়েছেন। তাতে তাদের বন্ধুত্বে কোনরকম আঘাত আসেনি। যুগ্মভাবে বিজয়ী হওয়া অস্মিতার সঙ্গে তার বন্ধুত্ব গাঢ়। অঙ্কিত তার ছোট ভাইয়ের মত। দীপ তার ভাগ্নে। পাশাপাশি সোনিয়ার সঙ্গে খুনসুটির সম্পর্ক।

এরপর তাকে আবার প্রশ্ন করা হয় অজয় চক্রবর্তী ছাত্রপরি সেরার মুকুট উঠেছে তার মাথায় এই প্রশ্নের কি জবাব দেবেন তিনি? একেবারে শান্তভাবে বলেছেন,’এটা কোন দৃষ্টিভঙ্গিতে লোকে বলছে আমি জানি। আমি ২০১৫ সাল থেকে গুরুজি (পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তী)-র কাছে তালিম নিচ্ছি। আমি নিজেও জানতাম না সারেগামাপা-র মঞ্চে আমার গুরুজি মহাগুরুজির আসনে থাকছেন। গ্র্যান্ড অডিশনে গিয়ে হঠাৎ দেখতে পাই উনি রয়েছেন। খুব ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। ওঁনাকে আগে কখনও বলা হয়নি আমি কীর্তন গাই। সেটা বলার দুঃসাহস আমার হয়নি। সেখানে হঠাৎ আমাকে দেখলে কী রিঅ্য়াক্ট করবেন আমি জানতাম না। তবে উনি আমাকে পরে বলেন, যে সাবজেক্ট নিয়ে তুই এসেছিস খুবই ভালো। সেটা ভালো করে গাইতে হবে। এটা নোপোটিজমের ব্যাপার নেই। ওখানে শান্তনু মৈত্র-শ্রীকান্ত আচর্য বা রিচা শর্মা আমার কেউ হন না। আমি গুরুজির ছাত্র, তাই বলে আমি স্পেশ্যাল কোনও প্রায়োরিটি পেয়েছি, বা ট্রিটমেন্ট পেয়েছি সেটা ভুল ধারণা। আমার যোগ্যতা অনুযায়ী বিচারকরা আমাকে বিচার করেছেন। নেপোটিজম কথাটা ভুল, জি বাংলার মধ্যে এমন কোনও ঘটনা ঘটে না। যাঁরা এই অভিযোগ করেছেন, সেগুলো ভুল। এগুলো খতিয়ে দেখা উচিত’।

ইতিমধ্যে সুযোগ পেয়েছেন প্রজাপতি ছবিতে প্লেব্যাক করার। তবে আগামী দিনে নিজের সংগীত সফরকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য বেশ ভিন্ন পরিকল্পনা রয়েছে তার। কীর্তনকে নিয়ে এগুলোর ইচ্ছে পদ্ম পলাশের। পাশাপাশি যদি গানের কথা এবং সুর সুন্দর হয় তাহলে অবশ্যই প্লে ব্যাক করবেন। বাংলা মৌলিক গান করার ইচ্ছে রয়েছে তার।

Back to top button

Ad Blocker Detected!

Refresh