“বুজরুকীর একটা সীমা থাকে” – বিসর্জনের ঠিক আগে গৌরীর সাথে দুর্গা প্রতিমার কান্না দেখানোতেই সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে খিল্লির ঝড় উঠল “গৌরী এলো” ধারাবাহিক নিয়ে, এসব বুজরুকি দেখিয়েও পরপর দুটো সপ্তাহে টিআরপিতে বঙ্গ সেরা এই কুসংস্কারাচ্ছন্ন ধারাবাহিক!

ধারাবাহিক মানেই সাধারণ মানুষের প্রত্যেক দিনের জীবনের বিনোদনের একটি বড় অংশ। বিনোদন আর ধারাবাহিক রীতিমত একে অপরের পরিপূরক হয়ে উঠছে দিনে দিনে। সাধারণ মানুষের প্রাত্যহিক জীবনের বিনোদন হিসেবে একটা অংশ হয়ে উঠেছে ছোট পর্দা। বাংলায় বাংলা ধারাবাহিকের জনপ্রিয়তা কম নয়। সিনেমাপ্রেমী মানুষের সংখ্যা থেকে বেশি দেখতে পাওয়া যায় সিরিয়ালপ্রেমী মানুষদের। আর ধারাবাহিকের কলাকুশুলীরাও প্রত্যেকদিনের মানুষের জীবনের একটা অংশ হয়ে ওঠেন। এ সমস্ত কথা মাথায় রেখেই প্রাইভেট চ্যানেলগুলি প্রায়শই নতুন নতুন ধারাবাহিক নিয়ে আসেন নিজেদের চ্যানেলে।
সাধারণত দিনে দিনে ধারাবাহিকের জনপ্রিয়তা বাড়ছে বই কমছে না। কিছু সংখ্যায় মানুষ যেমন পছন্দ করে একদম বাস্তবধর্মী ধারাবাহিক দেখতে। আবার কিছু সংখ্যার মানুষ আছেন যারা পছন্দ করছেন বিভিন্ন ধরনের ধর্মীয় ধারাবাহিক দেখতে। এরকম একটি ধারাবাহিক হলো জি বাংলার “গৌরী এলো”। রীতিমতো এখানে হিন্দু ধর্মের একটি বিশাল বড় অংশকে অতিরঞ্জিত করে দেখানো হচ্ছে। তবে সোশ্যাল মিডিয়াতে যতই খিল্লি হোক না কেন ধারাবাহিকের জনপ্রিয়তা কিন্তু কম নয়। পরপর দুটো সপ্তাহে বঙ্গ সেরা প্রমাণিত হয়েছে এই ধারাবাহিক।
ধর্মীয় ধারাবাহিক নিয়ে এর আগেও ছোট পর্দায় হাজির হয়েছিলেন টেলিভিশনের জনপ্রিয় পরিচালক স্বর্ণেন্দু সমাদ্দার। তিনি আবারও “গৌরী এলো” ধারাবাহিকের পরিচালকের আসনে আছেন। আর টিআরপি তালিকায় ধারাবাহিকের রেটিং দেখলে স্পষ্ট যে ধারাবাহিকের জনপ্রিয়তা ঠিক কতখানি। একটা সময় ছিল যখন লাগাতার বঙ্গ সেরা ধারাবাহিক প্রমাণিত হয়েছিল “মিঠাই”। তারপরে প্রায় সমান জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে “গাঁটছড়া”। কিন্তু “গৌরী এলো” এই দুটো ধারাবাহিককেই বড়সড় টেক্কা দিতে পারছে। দুটো ধারাবাহিককেই ভালোমতো টেক্কা দিয়ে বর্তমানে চলতি সপ্তাহতেও বঙ্গ সেরা হয়েছে “গৌরী এলো”।
প্রসঙ্গত ধারাবাহিকের শুরু থেকেই বিভিন্ন ধরনের ধর্মীয় গল্প গাথা দেখানো হয়েছে এই ধারাবাহিকে। এমন নয় যে ধর্মীয় গল্পকথায় দর্শকের কোন সমস্যা আছে। বরং একটা বড় অংশের মানুষ হিন্দুর ধর্মীয় গল্প সম্পর্কে জানতে পছন্দ করেন। সেহেতু এসব ধারাবাহিকগুলির জনপ্রিয়তাও দিন দিন বেড়েছে। সম্প্রতি শারদ উৎসবের হাত ধরে প্রত্যেকটি ধারাবাহিক দেখানো হচ্ছে দেবী দুর্গার আরাধনা। গৌরী এলো ধারাবাহিকও তার ব্যাতিক্রম নয়। সম্প্রতি এ ধারাবাহিকের বিসর্জনের ট্র্যাক দেখানো হচ্ছে। আর সেই ট্র্যাকের হাত ধরে দেখানো হচ্ছে যতসব অলৌকিক ঘটনা।
বিসর্জনের ট্র্যাকেই একটা পর্বে দেখানো হলো দেবীপ্রতিমার বিসর্জন মেনে নিতে পারছে না গৌরী। বিসর্জনের কথা মনে আসলে এই কান্নায় ভেঙে পড়ছে সে। এত অবধি ঘটনা ঠিক থাকলেও এর পরেই দেখানো হল গৌরীর সাথে সাথে কাঁদছে দেবী দুর্গার প্রতিমাও। এ ধরনের অবিশ্বাস্য ঘটনা দেখানোতেই কেঁপে উঠল সোশ্যাল মিডিয়ায় একাংশ। আর তারপরেই শুরু হল সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল সেই ভিডিওর ক্লিপ নিয়ে খিল্লি করা। একজন লিখেছেন, “ফাজলামির একটা সীমা আছে”। আরেকজন লেখেন, “গল্পের গরু গাছে উঠেই যাচ্ছে ফালতু যতসব”। আরো একজন লেখেন, “আর কতদিন চলবে এই সমস্ত অসুস্থ মানসিকতার নাটক”।