Story

ডঃ বিধান চন্দ্র রায়ের প্রেমিকার নামেই বর্তমানের স্মার্ট সিটি ‘কল্যাণী’ শহরের নামকরণ! রইল ‘কল্যাণী’র অজানা ইতিহাস

আজকের রীতিমতো স্মার্ট সিটি কল্যাণী। বেশ আধুনিকতার ছোঁয়া লেগেছে এই শহরে। তবে এই শহরকে জুড়ে রয়েছে একাধিক বিতর্ক। রয়েছে শহরের নামকরণ জুড়ে নানা রকম দ্বিমত। এই নামকরণের সঙ্গে জড়িত ডঃ বিধান চন্দ্র রায়। পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। ছিলেন বিখ্যাত ডাক্তার, আরো ভালো করে বললে ধন্বন্তরি ও বলা যেত তাকে।

ডাক্তার হওয়ার সূত্রেই তিনি বুঝতে পেরেছিলেন শরীরটা ভালো যাচ্ছে না। জীবনের শেষ কয়েকটি দিন বেশ ভুগেছেন তিনি। হয়েছে হার্ট অ্যাটাক, তবে এই তিনিই সুস্থ করেছেন কতনা মানুষকে! তার রোগীদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলেন মতিলাল নেহেরু, মহাত্মা গান্ধী, চিত্তরঞ্জন দাশ। তিনি বেশ কিছুদিন ধরেই বুঝতে পারছিলেন তার জীবনের শেষ অধ্যায় দিকে তিনি ক্রমশ এগিয়ে চলেছেন। কিন্তু কেইবা জানত জন্মদিনের দিনই তাকে চলে যেতে হবে!

তবে ডাক্তার বিধানচন্দ্র রায় চিরকুমার থাকার পথ বেছে নিয়েছিলেন। তবে কেন তিনি এ পথ বেছে নিয়েছেন তা নিয়ে রয়েছে অনেক মতবাদ। যদি তিনি সংসার করতে কিংবা সংসারী হতেন তাহলে হয়তো তার এত অনিয়ম হতো না। সদ্য ডাক্তারী পাশ করে যখন তিনি প্র্যাকটিস এর কাজে হাত লাগিয়েছেন তখনই কিংবদন্তি ডাক্তার নীলরতন সরকার এর মেয়ে কল্যাণীর সাথে তার হৃদয় বিনিময় হলো।

তবে কিংবদন্তি ডাক্তার তাকে ডেকে পাঠালে রোজার সম্বন্ধে জানতে চান তিনি। ডঃ বিধান চন্দ্র রায়ের রোজগার শুনে তিনি বলেন,”এর থেকে আমার মেয়ের হাত খরচ বেশি।” হয়তো এই কথাটাই গায়ে লেগেছিল তার। তিনি তৎক্ষণাৎ বুঝে গিয়েছিলেন এই সম্পর্ক আর পাবে না।

তবে প্রিয়তমার স্মৃতিচারণেই তিনি ১৯৫০ সালে নদীয়া জেলায় তৈরি করলেন একটি শহর। যা প্রাণের শহর কলকাতা থেকে প্রায় ৫০ কিমি দূরে অবস্থিত। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় গঙ্গার ধারে জায়গাটি মার্কিন সেনাদের ছোটখাটো উপনিবেশ ছিল। নাম ‘রুজভেল্ট নগর’। পরবর্তীকালে সেখানেই বিধানচন্দ্র রায় তৈরি করলেন তার প্রানের শহর ‘কল্যাণী’। তবে তিনি তাঁর স্মৃতিচারণ করতে গিয়েই এই নাম রেখেছেন কিনা তা নিয়ে নানারকম দ্বিমত আছে।

তৎকালীন সত্যজিৎ রায়ের ‘পথের পাঁচালী’ সিনেমাটি যখন টাকার অভাবে বন্ধ হয়ে যেতে বসেছিল। ঠিক সেই সময়ই সত্যজিৎ রায়কে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে ছিলেন তৎকালীন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ডঃ বিধান চন্দ্র রায়। সরকারি নিয়মের তোয়াক্কা না করে তিনি নিজেই উদ্যোগ নিলেন পথের পাঁচালীর মুক্তির জন্য। হয়তো তিনি নিজে উদ্যোগ না নিলে পথের পাঁচালী মুক্তি নিয়েও তৈরি হতো গভীর জটিলতা। তবে এসব দিকে তার নজর থাকলেও নজর দেন নি নিজের শরীরের উপর।

Back to top button

Ad Blocker Detected!

Refresh